আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা বিচারের জন্য আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়ার পক্ষে ওআইসির তহবিল সংগ্রহ অভিযানে এখন পর্যন্ত এক দশমিক দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি বলছে আইনজীবীদের অর্থ প্রদানের জন্য জরুরি প্রয়োজন পাঁচ মিলিয়ন ডলার।
৫৭টি দেশের বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) কর্মকর্তারা বলেছেন, জেনারেল সেক্রেটারিয়েট বলেছে, সংগৃহীত এক দশমিক দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে পাঁচ লাখ ডলার দিয়ে বাংলাদেশ এই তহবিলের বৃহত্তম অবদানকারী হিসাবে উঠে এসেছে।
তারা জানান, সৌদি আরব তিন লাখ, তুরস্ক, নাইজেরিয়া ও মালয়েশিয়া প্রত্যেকে এক লাখ করে প্রদান করেছে, অবশিষ্ট অংশ এসেছে ওআইসির একটি বিশেষ সলিডরিটি তহবিল থেকে।
অন্যদিকে গাম্বিয়া বলেছে, ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি আইন ফার্মকে আইসিজেতে এই আইনি লড়াইয়ের জন্য অর্থ প্রদান করতে অবিলম্বে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।
গত সপ্তাহে নাইজারে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলনের (সিএফএম) সাক্ষাৎকারে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী দাউদা এ জলো এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক আইনজীবী এবং সহায়তাকারী কর্মীদের বেতন দেয়ার জন্য আমাদের এখনই পাঁচ মিলিয়ন ডলার দরকার।
তিনি বলেন, গাম্বিয়া আসলে আইসিজে মামলার পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক আইনজীবী দলকে অর্থ প্রদানের বিষয়টি নিয়ে ‘তীব্র চাপের’ মধ্যে ছিল। জলো অনুমান করেছিলেন, আইসিজেতে চূড়ান্ত রায় না পাওয়া পর্যন্ত আইনিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য ব্যয় ১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে। গাম্বিয়া তার নেতৃত্বে গাম্বিয়ার আইনজীবীদের একটি গ্রুপের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসির ফোলি হগ লিগ্যাল ফার্মের আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের একটি দল নিয়োগ করেছে।
সিএফএমের বৈঠকে গাম্বিয়া ও বাংলাদেশ উভয়পক্ষই এই মামলাটির জন্য ওআইসির সহযোগী রাষ্ট্রীয় আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানাতে জোরালো আবেদন জানিয়েছিল। আর এদের পক্ষ থেকে জেনারেল সেক্রেটারিয়েট অনুদান গ্রহণের জন্য একটি বিশেষ অ্যাকাউন্ট খোলে।
ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল-ওথাইমিন সিএফএমকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের তাদের ‘নিজ ভূখণ্ড’ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং সমস্ত মানবাধিকারকে অস্বীকার করা হয়েছে। সিএমএফ-পরবর্তী একটি সংবাদ সম্মেলনে জিজ্ঞাসা করা হলে গণহত্যা মামলার তহবিল সংগঠিত করার জন্য ওআইসির কী পদক্ষেপ ছিল, ওআইসির মহাসচিব বলেন, তিনি সমস্ত সদস্য দেশকে আরও তহবিল অনুদানের আহ্বান জানান।
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি একটি জাতিগত নিধন, এটি একবিংশ শতাব্দীতে অকল্পনীয়।
সূত্র: বাসস